এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার।
মানববন্ধনে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারি চেয়ারম্যান আঃ বাকী বলে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা
মঙ্গলবার বিকেলে হত্যার সঠিক ও সুবিচার চেয়ে উপজেলার প্রাগপুর বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে নিহত টুটুলের চাচাতো ভাই সাবেক ইউপি সদস্য লিপটন হোসেন তোতাসহ তার পরিবারের সদস্যরা টুটুল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাকী কে দায়ী করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল আসামি এবং পরিকল্পনাকারীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
অপরদিকে নিহত জাহাঙ্গীর আলমের বাবা রুহুল আমিন তার বক্তব্যে দাবি করেন, মামলা না করার জন্য এখনো প্রতিনিয়ত আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাকীর লোকজন নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে তার পরিবারকে।
নিহত টুটুলের বোন এডভোকেট নাজনীন আক্তার রুপা তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের জমি জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে মামলা বিচারাধীন, তার পরেও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাকী কিভাবে ওই মামলা ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ দরবার বাসায়? আইন অনুযায়ী কোন মতেই সে এই সালিশ দরবার করতে পারেন না। তিনি আমাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা করেই সালিশ ডেকেছিলেন। আমি চেয়ারম্যানসহ আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনের সমাপনী বক্তব্যে শেষে প্রাগপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল সরকার গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আদালতে বিচারাধীন কোন মামলার সালিশ বিচার করার এক্তিয়ার আমাদের চেয়ারম্যানদের নেই। অতএব এই হত্যার দায়ভার কোনমতেই চেয়ারম্যান আব্দুল বাকী এড়াতে পারেন না।
এদিকে এর আগেও নিহত টুটুলের পরিবারের দুই জনকে এই জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের লোকজন দাবি করেন।
অপরদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জিয়াউর রহমানসহ থানা পুলিশের কর্মকর্তারা অর্থের বিনিময়ে মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন পরিবারটি।
উল্লেখ্য গত ২ মার্চ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জমি-জমা সংক্রান্ত শালিশ শেষে বাদি পক্ষের লোকজনের ছুরিকাঘাতে ১১নং আদাবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে, বিবাদিপক্ষের জাহাঙ্গীর আলম (৪০) আহত হয়। ঘটনার ৩ দিন পর গত রোববার ভোরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার প্রাগপুর ইউপির রঘুনাথপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান , প্রায় ২০ একর জমি নিয়ে মামলা মোকদ্দমা হয় ৪৭ বছর আগে। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টে চলমান, এর পরও পুনরায় কয়েকদিন আগে দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অত্র ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের তেকালা মৃত জফের শাহ্ এর পুত্র মনিরুল ইসলাম বাদি হয়ে মিমাংসা চেয়ে আবেদন করেন। মামলাটি হাইকোর্টে চলমান আছে জেনেও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাকি ওরফে বাকি কাজি মিমাংশার জন্য
গত বুধবার উভয় পক্ষকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে এসে সালিসে বসান।