কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় গ্রামীণ সড়ক সংস্কার ও সংরক্ষণ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত ১৩ এপ্রিল দুর্নীতির খোঁজে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয় অভিযান চালিয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে এলজিইডি প্রকৌশলীর কার্যালয়ে তদন্ত চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। অভিযানে প্রকল্পের কার্যাদেশ, ডিটেইলস এস্টিমেট বিলের কপিসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছে দুদক।
দুদকের সমন্বিত কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীলকমল পালের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট দল এ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় সড়কের কাজ যাছাই করেন কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান।
রাস্তার কাজে কার্পেটিং ও খোয়া ও বিটুমিন সরেজিমনে যাচাই করেন প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান। অভিমত ব্যক্ত করে প্রকৌশলী হাবিবুর জানান, খালি চোখে রাস্তায় ব্যবহৃত বিটুমিনের পরিমাণ সঠিক নেই বলে মনে হয়েছে। তবে এটির সঠিক মাত্রা জানার জন্য উপকরণের ম্যাটেরিয়াল টেস্ট করা প্রয়োজন।
জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রামীণ সড়ক সংস্কার ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ বাজার থেকে দাড়েরপাড়া-দৌলতখালী সড়ক মেরামত প্রকল্প নেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের কাজের জন্য ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজমেরী ট্রেডার্সের মালিক ঠিকাদার এস এম রবিউল আজম টিপুকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। প্রকল্পের ঠিকাদার এস এম রবিউল আজম টিপু হলেও কাজটি বাস্তবায়ন করেছেন এম আর খান ছোটন।
আরও জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলায় প্রকৌশলী ইফতেখার জোয়ার্দার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন-পুরোনো অন্তত ৭০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ হয়েছে, যার অধিকাংশেরই মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। কোথাও কোথাও মানহীন পরিস্থিতি ব্যাপক ভাবে দৃশ্যমান হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী আরও বলেন, সরকারের প্রতিটি উন্নয়নে উপজেলা প্রকৌশলী দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করেন এবং বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন। মূলত হাতেগোনা কয়েকজন ঠিকাদার দৌলতপুরের কর্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজমেরী ট্রেডার্সের মালিক ঠিকাদার এস এম রবিউল আজম টিপু এবং দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দ্দারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি তারা।
দুনীতি দমন কমিশন সমন্বিত কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীলকমল পাল জানান, গ্রামীণ সড়ক সংস্কার ও সংরক্ষণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালানো হয়েছে। রাস্তার উপকরণের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা করে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর উপস্থাপন করা হবে।