কুষ্টিয়ায় ইউনিপের পরে এবার মেট লাইফের নামে মোমিন এজেন্সির প্রতারণা
এক লক্ষ ছয় হাজার টাকার মধ্যে গ্রাহক ছাব্বিশ হাজার টাকা পেলেও হিসেব মেলেনি বাকি আশি হাজার টাকার।
কুষ্টিয়া জেলায় ইউনিপের নামে এক সময় একটি প্রতারকচক্র হাজার হাজার কোটি টাকা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছিল।
এক সময়ে এই প্রতারক চক্রের উপর প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে এই শহর থেকে হাজার কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় এই প্রতারক চক্রটি।
ঠিক একইভাবে আমেরিকান লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি মেটলাইফ এর নাম ভাঙিয়ে কুষ্টিয়ার পরিমল টাওয়ারে চতুর্থ তলায় মোমিন এজেন্সি নামে একটি প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে
প্রতারণার শিকার এমন বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী গ্রাহকের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, বিভিন্ন রকমের মোটা অংকের অর্থের প্রলোভন ও সুযোগ-সুবিধা দেখিয়ে মোমিন এজেন্সির মাঠ কর্মীরা গ্রহক সংগ্রহ করে আনেন ভ্যান, রিকশা চালক থেকে শুরু করে সমাজের উচ্চ শ্রেনীর মানুষ পর্যন্ত ।
তারা যখন সাধারন এই সকল জনগণকে তাদের গ্রাহক আওতায় আনেন তখন বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধার লোভ দেখানো হয় এই সকল সাধারণ জনগণকে অথচ একটি পর্যায়ে যে সাধারণ জনগণকে গুনতে হচ্ছে লোকসানের হিসাব।
এমন-ই একজন গ্রাহক কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের বাবুল আক্তার, তিনি মেট লাইফের মাঠ কর্মী পিয়ারপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল কালাম নামে এক ব্যাক্তির সাথে এলাকা ভিত্তিক পরিচয়ের এক পর্যায়ে কালাম বাবুল আক্তারকে মেট লাইফ পলিসি সম্পর্কে বোঝাায় এবং মোমিন এজেন্সির কুষ্টিয়া শাখায় ২০১৬ সালে একটি পলিসি চালু করায় ।
পরে দির্ঘ ছয় বছর ধরে বাবুল আক্তার মোট ছয়টি প্রিমিয়ামের মাধ্যম মোট ১০,৬,৮৪৮/= টাকা মেট লাইফ ইন্সুইরেন্সর মোমিন এজেন্সির দেওয়া একাউন্ট নাম্বারে জমা প্রদান করেন পরবর্তীতে যখন বিশ্বব্যাপী কোভিড আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়ে।
ঠিক সেই সময় বাবুল আক্তার দুটি প্রিমিয়াম দিতে ব্যর্থ হয়। এরপর বাবুল আক্তারের অর্থনৈতিক অবস্থা ধীরে ধীরে আরো দুর্বল হয়ে পড়লে বাবুল আকতার তার নামীয় লাইফ ইন্সুরেন্সটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
তখন থেকেই টাকা উত্তোলনের জন্য বাবুল আক্তারের শুরু হয় পরিমল টাওয়ারে চতুর্থ তলায় মোমিন এজেন্সিতে আসা-যাওয়া।
একের পর এক পায়ের জুতা ক্ষয় হয়ে গেলেও বাবুল আকতার ফিরে পায়নি তার প্রাপ্ত টাকা ও সঠিক হিসেব।
এরই মধ্যে একটি পর্যায়ে মেটলাইফ ইন্সুরেন্স দৌলতপুরের আল্লারদর্গা জনতা ব্যাংক ব্রাঞ্চে বাবুল আক্তারের নিজ নামীয় একটি হিসাব নম্বরে ২৬৩২৯/= টাকা প্রদান করেন।
বাকী ৮০৫১৯/= টাকা হিসেব দিতে গড়িমসি করে এই কোম্পানিটি।
একপর্যায়ে বাবুল আক্তার কোন দিশা না পেয়ে দ্বারস্থ হয় কুষ্টিয়া জেলার সাংবাদিকদের কাছে, বাবুল আক্তারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাংবাদিকরা মমিন এজেন্সির স্বত্বাধিকারী ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আব্দুল মোমিন এর কাছে এই টাকার তথ্য চেয়ে বসলে তিনি বলেন,কোম্পানি কখনো নিজের ঘর থেকে টাকা এনে দেয় না, জনগণের টাকা জনগণকেই দেওয়া হয়। মধ্য থেকে মোটা অংকের টাকা কোম্পানি নিয়ে যায়।
আর সে কারণেই বাবুল আক্তারের ৮০,৫১৯/= কোম্পানি কেটে নিয়েছে এ টাকা এখন অফেরৎযোগ্য।
আর এভাবেই বাবুল আক্তারের মতো কুষ্টিয়া জেলায় শতশত বাবুল আক্তার প্রতারিত হচ্ছে এই এজেন্সির মাধ্যমে আর তারা হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। চড়ছেন দামি গাড়িতে ও থাকছেন বিলাসবহুল বাড়িতে, আর বসছেন পরিমল টাওয়ারের মত ভিআইপি যায়গায় এসি লাগানো অফিসে।
এই সকল সাজসজ্জার কারণেই সাধারণ জনগণ তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে ফাঁদে।
আর এমন ফাঁদে পড়েই সর্ব শান্ত হচ্ছে সহজ-সরল জনগণ।