সাংবাদিক হত্যা, একের পর এক সাংবাদিক নির্যাতনসহ কুষ্টিয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হওয়ায় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের প্রত্যাহার দাবিসহ সাংবাদিক হত্যার, বিচার ও কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সদস্য, দৈনিক আরশীনগর পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার সম্রাট আলীর অপহরণ ও সাংবাদিক নির্যাতনকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে কুষ্টিয়া ডিসি কোর্টের সামনে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার আয়োজনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার ও কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা (জিটিভি ও যায়যায়দিন), সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান ( সংবাদ সারাবেলা), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান মৃধা পলাশ ( সাপ্তাহিক প্রভাষন), সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল হাসান ( পদ্মা গড়াই), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক চাঁদ আলী ( সকালের সময়), কুষ্টিয়া জেলা ইউনাইটেড অনলাইন প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সদস্য ফয়সাল চৌধুরী (এশিয়ান টিভি ও আমাদের নতুন সময়), কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি’র দপ্তর সম্পাদক
এস, এম, ওয়ালিদুজ্জামান শুভ
(নবচেতনা), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সালমান শাহরিয়ার রাজু ( পদ্মা গড়াই) প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক রুবেল হত্যাকান্ড ক্লুলেস থাকায় এই জেলায় সাংবাদিক নির্যাতনের মাত্রা মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেফতার না করে উল্টো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হামলাকারীর মামলা নিয়ে পুলিশ তাদের মদদ দিচ্ছে। কুষ্টিয়ার বিআইডিসি বাজারের জনাকীর্ণ এলাকা থেকে সাংবাদিক সম্রাটকে মাদক সম্রাট নাসির গং অপহরণ করে তার বাড়িতে নিয়ে ঘরে আটকিয়ে ব্যাপক হামলা চালায়। জগতি পুলিশ ক্যাম্প নাসিরের বাড়ি থেকে সাংবাদিক সম্রাটকে উদ্ধার করে, সেই মামলাও এখন পর্যন্ত রেকর্ড করেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে এবং অপহরণকারী ও হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবীতে এই মানববন্ধন। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর কুষ্টিয়ায় প্রথম সাংবাদিক হত্যা এই পুলিশ সুপারের সময়, বাউলদের উপর প্রথম হামলাও এই পুলিশ সুপারের সময়। সাংবাদিক নির্যাতনের অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন বর্তমান পুলিশ সুপার। এই জেলায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই মারাত্মক আকার ধারন করেছে। এই জেলার মানুষের জান মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পুর্ন ব্যর্থ পুলিশ সুপার। কুষ্টিয়ায় থাকার তার কোন অধিকার নাই। অবিলম্বে কুষ্টিয়া থেকে তাকে প্রত্যাহার করতে হবে। বক্তারা বলেন, পুলিশিং থেকে সরে গিয়ে পলমার্ক মার্কেট নির্মানে ব্যস্ত। এই আলিশান ভবনের টেন্ডার না করে, ঠিকাদার নিয়োগ না দিয়ে নিজেই ঠিকাদারি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ভবন নির্মানের ব্যায়ের উৎস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এর আগে ৮ জুলাই কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাসিবুর রহমান ওরফে রুবেল হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কুষ্টিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকেরা। সাংবাদিকেরা হাসিবুর হত্যার ঘটনাটি প্রশাসনের ব্যর্থতা উল্লেখ করে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের প্রত্যাহারের দাবিতে স্লোগান দেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, সাংবাদিক মহাসমাবেশ করে রুবেল হত্যা রহস্য উদঘাটন, হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে ও পুলিশ সুপারের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য যে, বর্তমান পুলিশ সুপারের সময় কুষ্টিয়ায়
সাংবাদিক রুবেলহত্যা, হরিপুরে দুই সাংবাদিক হামলার শিকার, শহরের নিশান মোড়ে সাংবাদিককে ক্ষুরের আঘাতে ৩৬ টি সেলাই, দৌলতপুরে ৩ সাংবাদিক সন্ত্রাসী হামলার শিকার, শহরের সাদ্দামবাজারে এক সাংবাদিকের উপর এনজিও কর্মীর হামলা, সুগারমিল এলাকায় সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলাসহ বেশ কিছু সাংবাদিক হামলার শিকার হন। অথচ পুলিশ নিস্ক্রিয় থাকায় এর সংখা বেড়েই চলেছে। এছাড়াও কুষ্টিয়ায় উল্লেখযোগ্য হারে চুরি, ছিনতাই ও হত্যার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান পুলিশ সুপারের সময় কুষ্টিয়ায় দেড় মাসে (স্থানীয় পত্রপত্রিকা ও সংশ্লিষ্ট থানার রেকর্ডবুক বলছে, কুষ্টিয়ায় জুলাই মাসের শুরু থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত) ১৩ জন খুন হয়েছেন। এছাড়া চলতি নভেম্বর মাসে ৪৮ ঘণ্টায় তিনটি খুন হয়েছে