কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়ন এলাকার জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে ও নিজ খরচে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচল করার লক্ষ্যে ভাগযোত এলাকার পদ্মা নদীর দুই পাড়ে মাটি তুলে রাস্তা করে ও নদীর মাঝে বাশঁ,কাঠের গুড়ি এবং তক্তা দিয়ে বিশেষ আকৃতির ছোট ব্রিজ নির্মাণ করে
জনগণের যাতায়াতের ক্ষেত্রে এক অনন্য নিদর্শন স্থাপন করেছেন ভাগযোত এলাকার মো.তারেক নাহিদ সরকার নামের এক ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক।
এতে করে রীতিমতো যান্ত্রিকতার ছোঁয়া লেগেছে চরাঞ্চলের জনজীবনে।
ভাগযোতের পদ্মা পাড়ের ওই এলাকায় সরজমিনে যেয়ে দেখা যায় উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা দুটি ইউনিয়ন রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী। এ দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে ও নানা বিধি কাজকর্মে নদী পারাপারে নৌকার বিকল্প কোন পথ নেই। এমন জায়গায় শুষ্ক মৌসুমে রাস্তা ও ছোট ব্রিজ নির্মাণ করার মাধ্যমে ওই দুটি ইউনিয়নের মানুষের মাঝে এরই মধ্যে পড়েছে যান্ত্রিক যানবাহনের ছোঁয়া সহ বেড়েছে নানা ধরণের সুযোগ-সুবিধা।
এ বিষয়ে চিলমারী ইউনিয়নে বসবাসকারী ষাট উর্ধ্ব প্রবীণ নাগরিক আক্কাস আলী বলেন, জন্মের পর থেকে নৌকা পারাপার ছাড়া কোনদিন ঘাটের ধারে পা রাখতে পারিনি বাপু এই ছোট ব্রিজ টুকু তৈরি করার জৈন্নে আজ এক্কেবারে অটোতে করে দৌলতপুরে যেতে পারছি।
অন্যদিকে রামকৃষ্ণ ইউনিয়নের ভাগযোত এলাকার বাসিন্দা কৃষক ছামিরুল আলী বলেন, চাষাবাদ করতে করতে আমার জীবন প্রায় শেষের দিকে পদ্মার বুকে ফসল ফলিয়েছি দীর্ঘ বছর ধরে, সারা জীবনই ফসল উৎপাদন করে মাথায় করে বইয়ে এনে ঘরে তুলেছি তা।কোনদিন একটু শান্তি কি জিনিস পাইনি। তবে কাঠের ব্রীজটা নির্মাণের পরে এবছর সমস্ত ফসল ট্রলিতে করে বাড়িতে এনেছি এ যেন অন্যরকম এক প্রশান্তি।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক তারেক নাহিদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে প্রায় এক মাস সময় নিয়ে চারশো শ্রমিকের হাড়ভাঙ্গা খাটুনির মাধ্যমে অবশেষে জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে পদ্মা নদীর দুই পাশে রাস্তা ও নদীর মাঝখানে বাঁশ, কাঠের গুড়ি ও তক্তা দিয়ে নির্মিত ব্রিজটি এখন জনগণের যাতায়াতের উপযোগী হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে এর সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার জনগণ। ইউনিয়ন দুটি পদ্মার চরে অবস্থিত হওয়ার কারণে সেখানে গাড়ি ঘোড়া, মাইক্রোবাস, ট্রাক্টর ও ট্রলি ইত্যাদি যাতায়াত করতে পারত না। দীর্ঘদিন ধরে আমার সহ অত্র দুটি ইউনিয়নের জনগণের প্রাণের দাবি ছিল বাংলাদেশ সরকারের কাছে যে ভাগযোত নদীর ঘাটে একটি পাকা ব্রিজ নির্মিত হোক এরই মধ্যে সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময় সরকারি দপ্তর থেকে লোকজন এসে মাপ যোগ করে চলে যাই পরে দিন যায় মাস আসে মাস ঘুরে বছর পার হয় কিন্তু আশার আলো দেখেনি ইউনিয়ন দুটি জনগণ।
সেই জায়গা থেকে চিন্তা করে দেশের আমি একজন নাগরিক হিসেবে জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে পদ্মার দুই পাড়ে মাটি তুলে রাস্তা এবং বাঁশ কাঠ দিয়ে ছোট একটি ব্রিজ নির্মাণ করে দিয়েছি।
এটি নির্মাণ করার পরে মূল ভূখণ্ড থেকে চরাঞ্চলের মানুষ এখন ইজিবাইক, পাখি ভ্যান, মাইক্রোবাস, ট্রাক্টর, ট্রলি নিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে পারছেন।
এরই মধ্য কৃষি প্রধান এই অঞ্চলে লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া ,নৌকার অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা আর কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে না, নষ্ট হচ্ছে না কারো মূল্যবান সময়, নির্বিঘ্নে করছে তারা যাতায়াত।