কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ ও জাসদের দিন দিন সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। এই দুই দল জোটের শরিক আওয়ামী লীগ ও জাসদের শক্তিশালী অবস্থান কুষ্টিয়ায়। পর পর হত্যাকাণ্ড, হামলা ও মামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও জাসদ দুই কেউ কাউকে ছাড় দেয় না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায়। মাহবুব-উল-আলম হানিফ কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও হাসানুল হক ইনু ভোড়ামারা মিরপুর আসনের সংসদ সদস্য। জাসদের কেন্দ্রীয় অনেক নেতার বাড়ি কুষ্টিয়াতে।
গেল ফেরুয়ারি মাসে ভেড়ামারার চাঁদগ্রামে সিদ্দিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সিদ্দিক মন্ডল আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন বলে দাবী আওয়ামী লীগের। এই ঘটনায় হত্যা মামলায় জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপনসহ জাসদ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জাসদ নেতাদের দাবি চাঁদগ্রামে ৬৯ বছরের বংশগত হানাহানিতে খুন হন সিদ্দিক। সিদ্দিক মন্ডল বিভিন্ন সময় নিজের অবস্থান ঠিক রাখার জন্য সরকারদলীয় লোক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে আসছেন।
এদিকে গত সোমবার রাতে চাঁদগ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী রিপনকে কুপিয়ে তার শরীর থেকে পা কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায়ও জাসদ নেতা চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপনসহ তার দলীয় লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার জাসদ নেতা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন আব্দুস সালাম। তিনি নির্বাচনে পরাজিত হলেও জাসদের একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। তাকে আল্লারদর্গা এলাকায় সন্ধ্যার পরে গত ১১ মে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এতে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর পরিবারের ৬ জনসহ ২১ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। একের পর হত্যাকাণ্ড ও হামলা মামলায় আওয়ামী লীগ ও জাসদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। আতঙ্কও বিরাজ করছে ভোড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলায়।
এদিকে কেন্দ্রীয় জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপন বলেন, চাঁদগ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ছিল বংশগত বিবাদ। আর সালাম হত্যাকাণ্ডটি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃতরা ঘটিয়েছে। যারা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত তারা ১৪ দলের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টির চেষ্টায় এসব হত্যাকাণ্ড ও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী বলেন, ভেড়ামারা ও দৌলতপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তা স্থানীয় দ্বন্দ্বের কারণে। ১৪ দল একটি আদর্শিক জায়গা। স্বাধীনতাবিরোধীদের মোকাবেলা করার জন্য ১৪ দল গঠন করা হয়েছিল। ১৪ দলীয় জোট মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। বিচ্ছিন্ন ঘটনায় ১৪ দলে ভাঙনের কোনো সুযোগ নেই।
মিরপুর ও ভেড়ামারা এলাকার সাধারন মানুষের দাবি- এখুনি এই দুই দলের সমস্যা সমাধান করা উচিত। আমরা সাধারন মানুষ এই দুই দলের দন্দ আর দেখতে ভালো লাগছে না।