কুষ্টিয়ায় চালকল মালিকদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশিদ গোপনে শ্বশুরের মিলে নিজ ব্র্যান্ডের চাল প্রস্তুত করছে। শুধু তাই নয় শ্বশুর কাবিল উদ্দিনের প্রতিষ্ঠান কাবিল অ্যাগ্রো ফুডে রশিদ মজুত করেছেন বিপুল পরিমাণ ধান।
বুধবার দুপুরে স্থানীয় প্রশাসন সহ কুষ্টিয়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল। সেখানে অভিযান চালালে এ তথ্য বেরিয়ে আসে।
তবে অভিযান শেষে রশিদ অ্যাগ্রো ফুড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তার শ্বশুর কাবিল উদ্দিনের প্রতিষ্ঠানে সামান্য ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কাবিল উদ্দিন আব্দুর রশিদের শ্বশুর। মিলটি বর্তমানে পরিচালনা করে তার শ্যালক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা ইসমাঈল হোসেন মুরাদ।
খাদ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, গোপনে সংবাদের ভিত্তিতে জানাযায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট এলাকায় অবস্থিত কাবিল অ্যাগ্রো ফুডে রশিদের বিপুল পরিমাণ ধান ও চাল মজুত আছে। এমন খবরের পর সেখানে অভিযান চালায় জেলা খাদ্য বিভাগ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এ সময় ওই মিলে রশিদ অ্যাগ্রো ফুডের নামে বিভিন্ন ব্রান্ডের চাল প্রস্তুত করতে দেখা যায়। পাশাপাশি ওই মিলের গুদামে বিপুল পরিমাণ ধানেরও মজুত দেখতে পান খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
মিলের ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, মূলত এ মিলে কাবিল উদ্দিনের জামাই চালকল মালিকদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশিদের মালিকানাধীন রশিদ অ্যাগ্রো ফুডের চাল তৈরি হয়। পাশাপাশি মজুত করা বিপুল পরিমাণ ধানও আব্দুর রশিদের।
জানা গেছে, আব্দুর রশিদের মালিকানাধীন চারটি মিল রয়েছে। তার বাইরে তিনি প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে শ্বশুরের মিলে অবৈধভাবে গোপনে দীর্ঘদিন ধরে চাল প্রস্তুত করে আসছেন এবং সেখানে নিয়ম বহির্ভুতভাবে মজুত করেছেন ধান।
শুধু কাবিল অ্যাগ্রো ফুডেই নয় প্রশাসনের চোখে ধুলো দিতে খাজানগর এলাকার অন্তত ৩টি মিলে ধান মজুত করে চাল প্রস্তুত করছে রশিদ। বিষয়টি খাদ্য বিভাগের লোকজনও ইতোমধ্যে জানতে পেরেছে।
বুধবার অভিযান পরিচালনাকালে কাবিল অ্যাগ্রো ফুডে রশিদের ১১ হাজারা বস্তা ধান মজুত দেখতে পান খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এছাড়া বিপুল পরিমাণও চালও মজুত ছিলো মিলটিতে।
অভিযান শেষে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন অজ্ঞাত কারণে রশিদ অ্যাগ্রো ফুডের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তার শ্বশুর কাবিল অ্যাগ্রো ফুডের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে এ সময় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবির নাথ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের বিচারক দবির উদ্দিন বলেন, ‘রশিদ তার আত্মীয়র মিলে ধান মজুত রেখে চাল প্রস্তুত করে আসছিলেন। আমরাও বিপুল পরিমাণ ধান-চাল পেয়েছি। তার নিজের প্রতিষ্ঠান রেখে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাল উৎপাদন করছে, তা আইন পরিপন্থি। বিষয়টি নিয়ে আমরা তাদের সতর্ক করেছি। এছাড়া জরিমানা করা হয়েছে।