কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শাজাহান আলী নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলামের আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত তিন পলাতক আসামির অনুপস্থিতিতে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের পান্না মৃধার ছেলে নাহারুল, একই এলাকার মৃত শমছের প্রামাণিকের ছেলে মকবুল, ওফিল প্রামাণিকের ছেলে শফি, মৃত জলিল প্রামাণিকের ছেলে শাজাহান, খলিল প্রামাণিকের ছেলে আজমল এবং ফিলিপনগর গ্রামের ইব্রাহিম মণ্ডলের ছেলে স্বপন।
এর মধ্যে রায় ঘোষণার সময় আজমল, শাজাহান ও শফি আদালতে উপস্থিত ছিল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ২৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামের শাজাহান আলীর বাড়িতে রাইফেল, বন্দুক, পিস্তল, এলজি, চাইনিজ হাত কুড়াল, লোহার রড, তরবারি, রামদা, বাঁশের লাঠি ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে হামলা করে একদল ডাকাত। আসামিরা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র লুট করে। এ সময় বাধা দেওয়ায় চাইনিজ কুড়ালের উল্টো পিঠ দিয়ে শাজাহান আলীকে আঘাত করে হত্যা করে আসামিরা। এ ঘটনায় পরেরদিন ২৮ এপ্রিল নিহত শাজাহান আলীর ছেলে বোরহান উদ্দিন বাপ্পি ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০০২ সালের ১৪ ডিসেম্বর দৌলতপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক ফেরদৌস হোসেন ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩০২/৩৭৯/৩৮০/৩৪/৪১১ পেনাল কোডের অভিযোগে ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, দৌলতপুর থানায় দায়ের করা হত্যা মামলার শুনানি শেষে ছয় আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ প্রত্যেকের ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।