কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্র হৃদয় শেখকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আলোচিত কিশোর গ্যাং বিএসবি গ্রুপের সাত সদস্যের প্রত্যেককে তিন বছর করে সাজা দিয়েছেন আদালত। রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছে- কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার মামুনুর রহমান সান্টুর ছেলে রাতুল হাসান নিবিড় (১৭), উপজেলা মোড় এলাকার আসাদুর রহমানের ছেলে নাজিদুর রহমান সিয়াম (১৭), কমলাপুর এলাকার কামরুজ্জামানের ছেলে অভিকুজ্জামান (১৬), হাউজিং সি ব্লক এলাকার আওলাদ খানের ছেলে ইপ্তি খান (১৫), রাজারহাট এলাকার ফারুকের ছেলে আরাফাত শাওন (১৭), থানাপাড়ার কামাল উদ্দিনের ছেলে মোবারক হোসেন (১৪) এবং থানাপাড়া এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে ফুয়াদ হোসেন সামি (১৭)। আসামিদের সবাই কিশোর গ্যাং বিএসবি গ্রুপের সদস্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারী ও শিশু আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী সাইফুদ্দীন বাপী ঢাকা পোস্টকে বলেন, কলেজছাত্রকে হত্যাচেষ্টা মামলায় কিশোর গ্যাংয়ের সাত সদস্যকে তিন বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আসামি অভিকুজ্জামান, ইপ্তি ও নিবিড়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি চারজনকে শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন (সাজা) আদেশ দেন আদালত।
রায় ঘোষণার পর আসামি অভিকুজ্জামান ও নিবিড়কে কড়া নিরাপত্তায় আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে, এ ঘটনায় আসামি ইপ্তি পলাতক রয়েছেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের ছবি তোলায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা আদালত প্রাঙ্গণেই সাংবাদিকদের গালাগাল করে। এ সময় পুলিশের সামনে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভেঙে ফেলা ও দেখে নেওয়ারও হুমকি দেয় তারা। এমনকি রায় ঘোষণার সময় আদালতে অর্ধশতাধিক কিশোর গ্যাং সদস্য উপস্থিত ছিল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোড এলাকায় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে আলোচিত কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা কলেজছাত্র হৃদয়কে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় হৃদয়কে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে কয়েক মাস জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে কলেজছাত্র হৃদয়ের বাবা মোহাম্মদ শেখ বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় ছয় জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও তিন থেকে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন কাদেরী তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণা করেন।