পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিকহারে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের দুই ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ১৭টি গ্রাম ও চিলমারী ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ায় ওইসকল গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ফলে বেড়েছে তাদের দূর্ভোগ দূর্দশা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের দুই ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ওইসকল গ্রামের অর্ধলক্ষ মানুষ। বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে আমন ধান, পাটক্ষেত ও মরিচক্ষেতসহ বিভিন্ন ধরণের কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানিয়েছে, হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে আজ বুধবার সকাল ৬টায় পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজও ৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী কয়েক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে পাউবো সূত্র জানিয়েছে। এদিকে কয়েককদিন ধরে পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মধ্যে পদ্মাচরের ১৭টি গ্রাম এবং চিলমারী ইউনিয়নের ১৮টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, চরাঞ্চলের ৮০ ভাগ বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় এসব গ্রামের প্রায় ২৫হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে পুরো রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নই পাবিন্দি হয়ে পড়বে। এদিকে বন্যা কবলিতদের দুর্ভোগ দুর্দশা বেড়েছে। দেখা দিচ্ছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, তার ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হওয়ায় ১৮টি গ্রামের প্রায় ৩০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুই হাজার বাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। আকষ্মিক বন্যায় আমন ধান, পাট, মরিচ ক্ষেতসহ বিভিন্ন ধরণের ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বুধবার দুপুরে বন্যার পানিতে ডুবে দক্ষিণ খারিজারথাক গ্রামের ছিদ্দিক মোল্লার ছেলে সিয়াম (৭) ও মনি জমাদারে মেয়ে ঝুমা আক্তার (৭) মারা গেছে বলে তিনি জানান।
বন্যা কবলিতদের ত্রাণ সহায়তার বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জানান, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের বন্যাকবলিত ২৫হাজার মানুষের ত্রাণ সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে এবং আরো পাঠানো হবে। অচিরেই তাদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।
পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হওয়ার পাশাপাশি ফিলিপনগর ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।